ঠাকুরগাঁওয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৭ নং চিলারং ইউনিয়নের ভেলাপুকুর লক্ষীপুর উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক খায়ের উদ্দীনের বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী মহাসড়কের ভেলাপুকুর লক্ষীপুর (নেংরীহাট) নামক স্থানে ঘন্টা ব্যাপী এই প্রতিবাদ সমাবেশ করে ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা।
উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপেন্দ্রনাথ রায়, চিলারং ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি আব্দুল মমিন, যুবলীগ নেতা তৈমুর রহমান,
অত্র স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী লিয়াকত আলী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আইনুল হক, সমাজসেবক মোহাম্মদ আল্লামা, অভিভাবক সদস্য পয়গাম আলী সহ ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগী শাহিন কাদির জানান, ভেলাপুকুর লক্ষীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ হবে জানতে পেরে আবেদন করি। এ সময় আমার কাছে দুই বারে পর্যায়ক্রমে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রধান শিক্ষক। পরবর্তীতে চাকরি বাবদ তিনি আমার কাছে ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। এত টাকা দিতে আমি অস্বীকৃতি জানালে তিনি কৌশলে স্কুলের পুরাতন কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি তৈরি করে দুইটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। পরে বিষয়টি নিয়ে আমরা ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করি। নতুন ম্যানেজিং কমিটি মামলা তোয়াক্কা না করে গত ১৪ই আগস্ট স্থানীয় দৈনিক আলোর কন্ঠ ও জাতীয় দৈনিক ঢাকা প্রতিদিন পত্রিকা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
তিনি আরো বলেন, দৈনিক আলোর কন্ঠ প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হয় না এবং জাতীয় দৈনিক ঢাকা প্রতিদিনের পাঠক অত্র জেলায় নেই। সেই সাথে আলোর কন্ঠ পত্রিকা যেদিন প্রকাশিত হয় সেদিনের সব পত্রিকা প্রধান শিক্ষক ক্রয় করে নেন। প্রধান শিক্ষক একক আধিপত্য বিস্তার করে নিয়োগ বাণিজ্য করার পায়তারা করছে যা বিধিসম্মত নয়। ফলে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য তিনি জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন জানান এবং শিক্ষা অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক খায়ের উদ্দীন নিয়মিত স্কুলে আসে না। প্রায় সময় ছুটিতে থাকে এবং মাসে ১৫ দিন পর স্কুলে আসলেও সকল হাজিরা একদিনে উঠিয়ে দেয়। এছাড়াও এডমিট কার্ডের টাকা বেশি করে নেয় এবং বছরে শুরুতে সরকারের দেয়া বিনামূল্যে বই বিতরণে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ২০০ করে টাকা নেয় এবং যারা টাকা দিতে ব্যর্থ তাদেরকে বই দেওয়া হয় না। তিনি তার ইচ্ছামত স্কুল পরিচালনা করেন কেউ উনার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। বিষয়টি উদ্ধাতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা।
ভেলাপুকুর লক্ষীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়ের উদ্দীনের সাথে স্কুলে গিয়ে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি ছুটিতে আছে বলে যোগাযোগ করা হয়নি এবং মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।