পুনম শাহরীয়ার ঋতু, ঢাকা:গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া এলাকায় একটি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি’র বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তাদের বিরুদ্ধে মার্কেট নিমার্ণ ও প্লট বিতরণে অনিয়ম, টেন্ডার ছাড়াই পুরাতন ভবন ও গাছ বিক্রি, দাতা সদস্য নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ
উঠেছে। এসব অভিযোগে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এমপির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।এলাকাবাসী ও অভিযোগে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া
আক্কেল আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতোয়ার রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল হাকীম মিয়ার বিরুদ্ধে ওই সব অভিযোগ উঠেছে।
ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির চার অভিভাবক সদস্য গত ৯ জুলাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এমপি’র কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ৬তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট একটি মার্কেটের ১ম তলা সম্পূর্ণ করা হয়েছে। কিন্তু নিমার্ণ কমিটিও করা হয়নি। ওই মার্কেটের প্লটও বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ওই নির্মিত মার্কেটের হিসাবও দেননি। অনিয়মের মাধ্যমে প্লট বিতরণেও করেছেন। অপরতিকে তারা দুজন কোন রকম টেন্ডার ছাড়াই
বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন ভবন ও বেশ কিছু মেহগুনি গাছ বিক্রি করেছেন, তারও কোনো হিসাব না দিয়েই ইচ্ছা মতো আসবাবপত্র ক্রয় করেছেন। এসব ক্রয়-বিক্রয়ে কোন কমিটি করা হয়নি। বিদ্যালয়ে কিছু দাতা সদস্য নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কতজন সদস্য কত টাকার বিনিময়ে নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ও কাউকে জানানো হয়নি বলে ম্যানেজিং কমিটির চার সদস্যরা অভিযোগ তুলেছেন।
অপর দিকে সম্প্রতি বিদ্যালয় মাঠে পশুর হাট বসানো হয়েছে। কিন্তু সেটা কিভাবে ও কত টাকার বিনিময়ে বসানো হয়েছে, সেটাও জানানো হয়নি।
এলাকাবাসী অভিযোগ, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে মিলেমিশে নানা অনিয়মের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা
হাতিয়ে নিয়েছেন। তাই যেসব বিষয়ে অনিয়ম উঠেছে, সেসব বিষয়গুলো সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী তাদের।অভিযোগকারীদের মধ্যে মতিউর রহমান মহব্বত ও শাহাব উদ্দিন জানান, এসব বিষয়ে অনিয়ম হওয়ায় আমরা চারজন অভিভাবক সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতার্ আমাদের সবাইকে ডেকে মিমাংসা করে দিয়েছেন।অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আতোয়ার রহমান জানান, কোনো পত্র-পত্রিকায় টেন্ডার ছাড়াই গাছগুলো বিক্রি করা হলেও গাছ বিক্রিত টাকা বিদ্যালয়ের কাজেই
লাগানো হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য বিষয়গুলোতেও কোনো অনিয়ম হয়নি।
অভিযুক্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাকীম মিয়া জানান, নিয়ম মাফিক গাছ কাটা দেরি হবে, তাই নিজেরাই
রেজিলেশন করে গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। আর উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েই পশুর হাট বসানো হয়েছে। কিন্তু ইজারাদারা কত টাকা দিবে? তা বলা হয়নি।
এছাড়া আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সে সব মিথ্যা অভিযোগ।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতার্ দেলোয়ার হোসেন জানান, মন্ত্রী
মহোদয়ের কাছে অভিযোগ দিলে তিনি ইউএনও স্যারকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে ইউএনও স্যার আমাকে তদন্ত করতে বলেন। এসব বিষয়ে তদন্ত
প্রতিবেদনের প্রক্রিয়া চলছে।