দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) করোনাভাইরাসে আরও ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ৪২ জন ও নারী ৩৪ জন।
এ সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৮৪৬ জনের। রোগী শনাক্তের এই সংখ্যা গত দুই মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর চেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ১৪ এপ্রিল, ৫ হাজার ১৮৫ জনের।
আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশে এ পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ৮ লাখ ৬১ হাজার ১৫০। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৭০২ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩৮৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯০৩ জন।
ক
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। এরপর ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে ১৪ জন করে, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া রংপুর বিভাগে ৬ জন, বরিশালে ২ জন, সিলেটে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সুখবর, ময়মনসিংহ বিভাগে এ সময়ের মধ্যে করোনায় কোনো মৃত্যু হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২৫ হাজার ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।
দেশে এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। পরে তা আরও দুই দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা আরও বাড়িয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু দেশে এখন সংক্রমণ পরিস্থিতি এপ্রিলের মতো ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। ভারত সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে ঢাকাকে সারা দেশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঢাকার আশপাশের চারটি জেলাসহ মোট সাতটি জেলায় জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের চলাচল ও কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আজ সকাল ছয়টা থেকে শুরু হয়ে চলবে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত। এই সাত জেলা হলো মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ।