গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গাদের সমস্যাকে খাটো করে দেখতে চাইছে পশ্চিমা বিশ্ব এবং এ কারণে মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের উপর গৃহীত রেজুলেশনে অনুপস্থিত থেকেছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা সমস্যাকে গুরুত্ব না দিলে এ ধরনের রেজুলেশনে বাংলাদেশ সমর্থন দেবেনা-এমন অবস্থানে মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বকে এই শক্ত বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ বলে জানিয়েছেন একাধিক সূত্র।
এ বিষয়ে একজন কূটনীতিক বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্ব ধরেই নিয়েছে মিয়ারমার নিয়ে যেকোনো ধরনের রেজুলেশনে বাংলাদেশ সমর্থন দেবে। কিন্তু এটি আমাদের অবস্থান যে, রোহিঙ্গা ইস্যুকে গুরুত্ব না দিলে আমরা সমর্থন দেবো না।’
চার পাতার এই রেজুলেশনে দুটি ভাগ আছে। প্রথমভাগ অর্থাৎ প্রিআ্যম্বল প্যারাগুলিতে মিয়ানমার পরিস্থিতি বা ব্যাকগ্রাউন্ড বর্ণনা করা হয়েছে এবং অপারেশনাল প্যারাতে কি করনীয় সেটি উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রেজুলেশনে অপারেশনাল প্যারা অর্থাৎ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটিতে দেশটির গণতান্ত্রিক সমস্যা, জরুরি অবস্থা, রাজনৈতিক বন্দী, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও আসিয়ানের কেন্দ্রীয় ভূমিকার প্রতি নজর দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে প্রিআ্যম্বল প্যারায় অর্থাৎ এই রেজুলেশনে তাদের নিয়ে কোনও কিছু করনীয় নেই।
এ বিষয়ে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এই রেজুলেশন নিয়ে কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলছে। ভোটাভুটির আগের দিন পর্যন্ত আমরা অনুরোধ করেছি রোহিঙ্গা বিষয়টি যেন অপারেশনাল প্যারায় থাকে। কিন্তু আমাদের কথা তারা রাখেনি।’
কোন যুক্তি দেখিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব রোহিঙ্গা সমস্যাকে খাটো করে দেখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের বক্তব্য হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বা অন্য কিছু করনীয় হিসাবে উল্লেখ থাকলে মিয়ানমার সামরিক সরকারকে বৈধতা দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত খোড়া যুক্তি কারণ ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জরুরি’ বা এই ধরনের বাক্য লেখা হলে সামরিক সরকারকে বৈধতা দেওয়া না কারণ এখানে বিষয়টি জরুরি সেটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে কিন্তু কে করবে সেটির কথা বলা হয়নি।’
এই রেজুলেশনে অপারেশনাল প্যারায় যা বলা হয়েছে সেটির বিষয়ে বাংলাদেশের অমত নেই তবে রোহিঙ্গা ইস্যুটির গুরুত্ব ঠিকমতো প্রতিফলিত না হওয়ায় এটি সমর্থন করেনি বাংলাদেশ বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের যে চাহিদা ছিল সেটির যথাযথ প্রতিফলন না থাকার কারনে আমরা রেজুলেশনে অনুপস্থিতি থেকেছি।’