শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন

হল না ছাড়ার ঘোষণা ঢাকা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

কলেজ প্রশাসনের ঘোষণার পরও হল ছাড়ছেন না ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থীরা। বরং কর্তৃপক্ষের একতরফা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শনিবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় কলেজ প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিলেও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সে নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের বক্তব্য আলোচনায় না গিয়ে একতরফাভাবে এমন সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও দমনমূলক।

এর আগে সকাল থেকেই পাঁচ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এরপরে বিকেলে অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২২ জুন দুপুর ১২টার মধ্যে সকল ছাত্রছাত্রীকে হল ত্যাগ করতে হবে। তবে পেশাগত পরীক্ষার্থীদের এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের এ নির্দেশের বাইরে রাখা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের পক্ষে তৌহিদুল আবেদীন তানভীর জানান, ‘আমরা হল ছাড়ছি না। আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে এই ধরনের একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত পুরোপুরি অযৌক্তিক। পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হলেও আমরা হলে অবস্থান চালিয়ে যাব। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ কলেজ প্রশাসন কোনো বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা না করেই আমাদের বাইরে পাঠাতে চাইছে। এটি আমাদের নিরাপত্তা ও শিক্ষাজীবন দুইই হুমকির মুখে ফেলবে।’

ঢামেক বন্ধের ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থী, বিশেষ করে যারা বাড়ি থেকে দূরে পড়াশোনা করেন, তারা হলে না থেকে কোথায় যাবেন, সেটি অনিশ্চিত।

এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, “বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়াই হলে তালা দেওয়ার নির্দেশ শিক্ষার্থীদের প্রতি চরম অবিচার। আমরা আন্দোলনে থাকব এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’

শিক্ষার্থীরা বলছেন, কেবল আবাসন নয় নিরাপদ ও মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে না।

এর আগে, আবাসনের দাবিতে চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস (হল) দ্রুত খালি করে দিতে নির্দেশ দিয়েছে কলেজ প্রশাসন।

শনিবার (২১ জুন) কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলেজের একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলগুলোর অবকাঠামোগত দুরবস্থার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসছেন। এর ফলে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনের লক্ষ্যে শনিবার জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাডেমিক কাউন্সিল একমত পোষণ করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তবে দৃশ্যমান অগ্রগতির জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা অনড় অবস্থান নিয়েছে। এরই মধ্যে গণপূর্ত বিভাগ ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাসের মূল ভবনের চতুর্থ তলাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করলেও শিক্ষার্থীদের অসহযোগিতার কারণে তা খালি করা যায়নি।

প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, এ অবস্থার ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে। এছাড়া সদ্য ভর্তি হওয়া নতুন ব্যাচ (কে-৮২) নিজেদের উদ্যোগে বা ‘প্ররোচিত’ হয়ে ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচি বর্জন করেছে, যা কলেজ প্রশাসনের মতে একটি ‘কালো অধ্যায়’। ফলে একাডেমিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দেওয়া পাঁচ দফাগুলো হলো…

১. নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস করতে হবে।

২. ছাত্রাবাস নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

৩. নতুন একাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করতে হবে।

৪. আবাসন ও অ্যাকাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন করতে হবে ও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

৫. সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঠিক করতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102