দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃপটুয়াখালীর দশমিনায় ২২দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে শতে শতে জেলের জালে মিলছে না ইলিশ। সারাদিন-রাতে নদীতে জাল ফেলে প্রায় খালি হাতে অনেক জেলে ফিরে আসছেন। এতে ইলিশ শূন্য হয়ে পড়েছে উপজেলার হাট-বাজার। আর ঋনের কিস্তি ও দাদনের দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলে পরিবার।
গত বছর এই দিনে যেখানে রাত-দিন ইলিশ বেচাকেনায় ব্যস্ত থাকতো ক্রেতা ও বিক্রেতা, সেখানে এখন শূন্যতা বিরাজ করছে। ইলিশের উৎপাদনের লক্ষ্য নদীতে ২২দিন সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার ৪দিনের বেশি সময় পার হলেও জেলেদের জালে মিলছে না ইলিশ। মাছ শিকার না হওয়ার ফলে মাছের আকাল বলে দাবি করেন জেলেরা। মাছ না পাওয়ায় হাজার-হাজার জেলে পরিবারের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। ইলিশের আমদানি না হওয়ায় অলস সময় কাটাচ্ছেন জেলে ও আড়ৎদাররা। মাছ বিক্রির ঘাটসহ বিভিন্ন হাটে ঘুরে দেখা যায়, ঘাটে তেমন মাছ নেই বললেই চলে। জেলে ও আড়ৎদাররা অলস সময় পার করছেন।
এ সময় জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে কিন্তু নদীতে মাছ নেই। সারাদিন নদীতে জাল ফেলে এবং মাছ শিকার করলে দুই/চারটা মাছ পাওয়া যায়। এ দিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকার তেলের খরচও জোগাড় করা যায় না। উপজেলার ১০হাজার ১শ’ ৭০ জেলে রয়েছে এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞার সময় প্রায় সাড়ে ৫হাজার জেলেকে ২০কেজি হারে সরকারি চাল দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে জেলেদেরকে দাদন দিয়ে এখন বেকাদায় পড়ছে দাদন ব্যবসায়ীরা। মাছ ধরা না পড়ায় তারা মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না।
স্থানীয় জেলেরা জানান, আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। আমাদের সংসার চালাতে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে পরিবার পরিজন, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কিভাবে চলবো সে চিন্তায় আছি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুব আলম তালুকদার জানান. জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে জীববৈচিত্রের ওপর ভারসাম্যহীন আঘাতের ফলে আর তেঁতুলিয়া-বুড়াগ্যেরাঙ্গ নদীতে গভীরতা ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ায় ইলিশের প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে নদীতে ইলিশ মাছের অকাল দেখা দিয়েছে। উপজেলার নদী সিমার ৮/১০টি স্পট আছে সেগুলো দিন দিন ভরাট হয়ে গেছে। ওই স্পটগুলো ড্রেজিং করলে আবার নদীতে ইলিশের দেখা মিলতে পারে এমনটাই মনে করে এই কর্মকর্তা।