অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় সোমবার (১২ মে) একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৯৪ জন। ফলে অক্টোবর ২০২৩ থেকে চলমান এই সংঘাতে নিহতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৮৬২ জনে, আর আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ জনে।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু। উভয় সংস্থাই পৃথক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সোমবার গাজাজুড়ে ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালিয়েছে, যা গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ হামলা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় গত ১৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৭৪৯ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মানুষ চাপা পড়ে আছেন, যাদের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছে উদ্ধারকারীরা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা সামরিক আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। এরপর প্রায় দুই মাস কিছুটা শান্তিপূর্ণ সময় কাটায় গাজাবাসী। কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং বন্দিমুক্তি চুক্তি নিয়ে মতানৈক্যের জেরে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ফের হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, এই দীর্ঘমেয়াদী আগ্রাসনের ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অবকাঠামোগতভাবে পুরো গাজা শহর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতোমধ্যে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলমান রয়েছে।
এতসব আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও গাজায় ইসরায়েলের হামলা থামার কোনো লক্ষণ নেই। ফলে মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।