শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

আগের দিন নেই, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের প্রশ্রয় দেয় না : খাজা আসিফ

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

একসময় ইসলামি সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও বর্তমানে সেই অধ্যায় অতীত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। পাশাপাশি, অতীতে পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদের উত্থানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথাও স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন তিনি।

রোববার (১১ মে) ইসলামাবাদে বিবিসির পাকিস্তান প্রতিনিধি আজাদেহ মোশিরিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন খাজা আসিফ। সাক্ষাৎকারের শুরুতে ভারতের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন, না, পাকিস্তানে এমন কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের তৎপরতা নেই।

সাংবাদিক মোশিরি পরে জানতে চান, কাশ্মিরের উরি (২০১৬) ও পুলওয়ামা (২০১৯) হামলার জন্য দায়ী জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই মোহাম্মদ এখনো পাকিস্তানে সক্রিয় রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র যে অভিযোগ তুলেছে, সে বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান কী। জবাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে যে মুজাহিদিন বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল, বর্তমানের অনেক জঙ্গিগোষ্ঠী সেই বাহিনীর উত্তরসূরি। তিনি বলেন, এসব আমাদের অতীত। যারা একসময় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ছিল, তাদের জন্যই এখন আমাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের সাবেক মিত্রদের কর্মের দায়ভার এখন আমাদের ঘাড়ে চাপাচ্ছে।

খাজা আসিফ দাবি করেন, পাকিস্তানে এখন আর কোনো সক্রিয় জঙ্গি নেতা নেই। যদিও তাদের অনেকেই জীবিত রয়েছেন, তবে তারা পাকিস্তান বা অন্য কোনো দেশে আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নন। এর আগে, গত মাসে যুক্তরাজ্যের টিভি চ্যানেল স্কাই টিভিকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, এটি একটি নোংরা কাজ, এবং গত ৩০ বছর ধরে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটা করে যাচ্ছি।

সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ২২ এপ্রিল ভারতের কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ২৬ জন পর্যটককে হত্যা করে। নিহতদের সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF) নামে একটি জঙ্গি গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করে। ভারতীয় তদন্তে জানা যায়, এটি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা সংগঠন।

এ ঘটনার জেরে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু নদীর পানি বণ্টনচুক্তি পর্যালোচনা এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল। এর জবাবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ পাল্টা পদক্ষেপ নেয়।

দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চূড়ান্ত রূপ নেয় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে ভারতীয় সামরিক অভিযানে। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের কয়েকটি এলাকায় চালানো এ অভিযানে নয়াদিল্লির দাবি অনুযায়ী ৭০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে পাকিস্তান বলেছে, এতে নিহত হয় ৩১ জন এবং আহত হয় ৫৭ জন।

ভারতের অভিযানের পাল্টা হিসেবে পাকিস্তান শুরু করে ‘বুনিয়ানি উল মারসুস’— যার আরবি অর্থ ‘সীসার প্রাচীর’। এই সংঘাত চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসে এবং তাদের চাপেই উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। গত শনিবার থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102