সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের রেশ না কাটতেই ফের উত্তপ্ত মন্তব্য পাকিস্তানের পক্ষ থেকে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হুঁশিয়ারি—দেশে কোনও ধরনের আক্রমণ হলে জবাব হবে চূড়ান্ত, ব্যাপক এবং নির্দয়।
সোমবার (১২ মে) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী স্পষ্টভাবে বলেছেন, “পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব বা ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘিত হলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
এই সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব আহমেদ ও নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রাজা রব নেওয়াজও উপস্থিত ছিলেন।
যুদ্ধবিরতি কার অনুরোধে?
যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গে চৌধুরী দাবি করেন, যুদ্ধ বন্ধের অনুরোধ পাকিস্তান নয়, বরং ভারতই করেছে। তিনি বলেন, “৬ ও ৭ মে ভারতের কাপুরুষোচিত হামলার পর পাল্টা জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই আমরা। এবং ১০ মে সফল পাল্টা হামলার পর আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের আহ্বানে ভারতের অনুরোধেই আমরা যুদ্ধবিরতির পথে এগোই।”
২৬টি লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা
জেনারেল চৌধুরী জানান, ‘বুনইয়ান উল মারসুস’ নামে পরিচালিত অভিযানে পাকিস্তান ভারত ও ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের ২৬টি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল—সুরতগড়, সিরসা, আদমপুর, ভুজ, নালিয়া, বারনালা, আওন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, উদমপুর ও পাঠানকোটের বিমানঘাঁটি। তিনি দাবি করেন, এসব স্থানে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়াও ভারতের ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চ স্থাপনাগুলো, এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, লজিস্টিক ঘাঁটি, ফিল্ড সাপ্লাই ডিপো এবং রাডার স্টেশনগুলোকেও নিশানা করা হয়েছে।
ভারতীয় সেনাদের সাদা পতাকা?
সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর দাবি, পাকিস্তানের পাল্টা হামলার মাত্রা দেখে ভারত হতবাক হয়ে পড়ে এবং কিছু সামরিক ঘাঁটিতে সাদা পতাকা উত্তোলন করে সংঘাত বন্ধের আবেদন জানায়। পাকিস্তানের মতে, এসব ঘাঁটি থেকেই আজাদ কাশ্মিরে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছিল।
সাইবার যুদ্ধেও হামলা
জেনারেল চৌধুরী বলেন, ভারতের ওপর পাকিস্তান সফল সাইবার হামলা চালায়, যার ফলে সাময়িকভাবে ভারতের সামরিক অবকাঠামো ভেঙে পড়ে বা অকার্যকর হয়ে পড়ে।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের দাবির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সংঘাতের পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কিছু বিবৃতিতে যুদ্ধ পরিস্থিতি প্রশমনের ইঙ্গিত মিলেছে।