কাশ্মিরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল। মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে নয়াদিল্লিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গত ৪৮ ঘণ্টায় এটি দোভালের দ্বিতীয় বৈঠক প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্ভাব্য হামলার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের সব রাজ্যে বেসামরিক প্রতিরক্ষা কার্যকারিতা যাচাইয়ে মক-ড্রিল আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথম এমন উদ্যোগ নেওয়া হলো।
কাশ্মিরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিক নিহত হন। ভারত এই হামলার পেছনে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা ও ‘ডিপ স্টেট’-এর মদত রয়েছে বলে দাবি করেছে। মোদি সরকার এর জবাবে পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা বাতিল করে এবং ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
ভারতের এই পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে উল্লেখ করে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদও শিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে। সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে দুই দেশই।
ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের একাধিক বৈঠকে পেহেলগাম হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান এবং সেনাবাহিনীর তিন প্রধানের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন।
এর আগে এক বৈঠকে মোদি সশস্ত্র বাহিনীকে ‘অভিযানের ধরন, লক্ষ্যবস্তু ও সময় নির্ধারণে পূর্ণ স্বাধীনতা’ দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে।
পাকিস্তান সরকার এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং একটি নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
চলমান উত্তেজনা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনলে দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা হুমকির আশঙ্কা বাড়তে পারে।