শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০৯ অপরাহ্ন

মানব পাচারে টাকা আত্মসাৎ, সাবেক অর্থমন্ত্রী কামালসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫

প্রতারণার মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় মানব পাচার করে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা বাদী হয়ে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে ১২ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা রয়েছেন।

দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। আসামি তালিকায় মুস্তফা কামালের পরিবারের সদস্যরাও আছেন। আসামিদের মধ্যে আছেন– সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, ওয়ান-ইলেভেনের সময় আলোচিত সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক এমপি বেনজীর আহমদ প্রমুখ।

এজাহারে বলা হয়, ১২ রিক্রুটিং এজেন্সির ৩২ মালিক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার স্থলে অতিরিক্ত পাঁচ গুণ অর্থ নেওয়া হয়েছে। ৬৭ হাজার ৩৮০ জন প্রবাসীর কাছ থেকে ওই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এতে বলা হয়, ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে মেসার্স অরবিটাল এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ৬ হাজার ২৯ প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরি কামাল। তাঁকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।

মেসার্স অরবিটাল ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ২ হাজার ৯৯৫ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫০ কোটি ১৬ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির আরেক মালিক মুস্তফা কামালের মেয়ে নাফিসা কামাল। তাঁকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে। স্নিগ্ধা ওভারসিজ লিমিটেডের মাধ্যমে ৬ হাজার ৬৫৭ জন প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগমও আসামি।

বিনিময় ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৫ হাজার ৪৫৮ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৯১ কোটি ৪২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান ভূঁইয়া ও তাঁর স্ত্রী তাসলিমা আক্তার। তাদের আসামি করা হয়। ফাইভএম ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৭ হাজার ১২৪ জন প্রবাসী থেকে অতিরিক্ত ১১৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ আবদুল মুকিত, মেহবুবা আফতাব সাথী এবং মাসুদ উদ্দিনের মেয়ে তাসনিয়া মাসুদ আসামি।  মেসার্স ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭৮৮ জন থেকে ৬৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহা. নুর আলী, তাঁর স্ত্রী সেলিনা আলী, মেয়ে নাবিলা আলী, নাছির উদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক সচিব খোন্দকার শওকত হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।

ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ৭ হাজার ৭৮৭ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহাম্মদ রুহুল আমিন ও তাঁর স্ত্রী লুৎফুর নেছা শেলীকে আসামি করা হয়েছে। মেসার্স আহমদ ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৮ হাজার ৫৯২ প্রবাসীর কাছ থেকে ১৪৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ঢাকা-২০ আসনের সাবেক এমপি বেনজীর আহমদকে আসামি করা হয়। বি এম ট্রাভেলস লিমিটেডের মাধ্যমে ৮ হাজার ৯৩ জন প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১৩৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম এবং তাঁর স্ত্রী মৌসুমি আক্তার আসামি।

বিএনএস ওভারসিজ লিমিটেডের মাধ্যমে ৪ হাজার ২১৫ প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ৭০ কোটি ৬০ লাখ টাকা নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক যুবলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ সৈকত ও তাঁর স্ত্রী নসরুন নেছাকে আসামি করা হয়েছে। রুবেল বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে ২ হাজার ৮৪৫ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৪৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক মুহাম্মদ মজিবুল হক রুবেল ও তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহার হীরামনি আসামি। দ্য ইফতী ওভারসিজের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭৯৭ প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ৬৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। মালিক মো. রুবেল ও বোরহান উদ্দিন পান্নাকে আসামি করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102