রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে চার সংস্কার কমিশন সুপারিশমালা জমা দিয়েছে। এ সুপারিশমালার ভিত্তিতে দ্বিতীয় ধাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য সংস্কার বিষয়ে আলোচনা হবে।
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আগামী মাসেই জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হবে। রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তুলতে এই কমিশন কাজ করবে। এ কমিশনের সদস্য হিসেবে ছয়টি কমিশনের প্রধানরা রয়েছেন।
তৃতীয় ধাপে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইন ও নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু হবে। চতুর্থ ধাপে হবে বাস্তবায়ন।
বুধবার বুধবার সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এসব কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ড. ইউনূস বলেন, এটা মতৈক্য প্রচেষ্টা, সবাই একমত হবেন। কিন্তু কিছু বিষয়ে একদমই একমত হবেন না। তা না হলে আমরা কী স্বপ্ন দেখলাম? আমরা নিজেরা স্বপ্ন দেখলাম, আর সেই স্বপ্নে মানুষের অংশ নেই, সেটাতো হতে পারে না। আমরা সেই স্বপ্নের কতটুকু এখানে নিয়ে এসেছি, সেটার জন্যেই এই আলোচনা। এটা বাইরে থেকের চাপানোর কোনও জিনিস নয়, ভেতর থেকে উদ্ভূত একটা জিনিস।
আগামীতে মতৈক্য প্রতিষ্ঠার জন্য যে আলোচনা হবে, সেখানে কমিশনের সদস্যরাই নেতৃত্বে দেবেন বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, যেহেতু আপনারাই তাদের পক্ষ থেকে স্বপ্ন দেখেছেন, কীভাবে তাদের স্বপ্ন আপনাদের সঙ্গে একাকার হয়ে যাবে। তার মাধ্যমে আমরা যেটা গঠন করতে চাচ্ছি, যার উদ্দেশ্য হলো এটা গণঅভ্যুত্থানের একটা চার্টার তৈরি হবে। ওই যে নতুন বাংলাদেশের একটা চার্টার, সেরকম চার্টার মতৈক্যের ভিত্তিতে তৈরি হবে। নির্বাচন হবে, সবকিছুই হবে; কিন্তু চার্টার থেকে যাবে। এই চার্টার থেকে যাবে, ইতিহাসের অংশ হিসেবে এটা আমাদের জাতীয় কমিটমেন্ট। এটা কোনও দলীয় কমিটমেন্ট না। আমরা আশা করছি, সব দল এই চার্টারে সাইনআপ করবে।
এটা বাংলাদেশি, বাঙালি জাতির একটা সনদ, যে সনদ আমরা বুকে নিয়ে অগ্রসর হবো। যত দ্রুত পারি, যত বেশি পরিমাণে এটা বাস্তবায়ন করতে পারি করতে থাকবো। ভবিষ্যতে যে নির্বাচন হবে, এটাও হবে এই চার্টারের ভিত্তিতে। সেটাও যেন ঐকমত্যের সরকার হয়-যে চার্টারকে আমরা ধরে রেখেছি। যত কিছুই হোক, এটা যেন হাত থেকে ছেড়ে না দেই। তা না হলে এই স্বপ্নের যে কনটিনিউইটি সেটি থাকবে কী করে! আমরা সেই স্বপ্নের কনটিনিউইটি চাই, বাস্তবায়ন চাই।
তিনি বলেন, নির্বাচনও এই চার্টারের একটা অংশ হবে, ঐকমত্যের নির্বাচন হবে। তা নাহলে চার্টার হারিয়ে যাবে। কাজেই এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।