রুটি-রুজি নিয়ে প্রশ্ন তুললেই আইএসএফের নামে কুৎসা রটানো হচ্ছেঃ নওশাদ সিদ্দিকী।
হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে দল সরব হচ্ছে, মুসলমানদের ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়েও দল প্রশ্ন তুলছে। তখনই আইএসএফের নামে দেগে দেওয়া হচ্ছে এটা মুসলমানের দল অথবা বিজেপির দালাল। ইদানিং আসন্ন নির্বাচনে আসন সমঝোতা না হওয়াতে বামপন্থীরাও নানান অপপ্রচার করছে। এই সমস্ত কুৎসা, অপপ্রচারকে মোকাবিলা করে আইএসএফ এগোবে। শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের অধিকারের পক্ষে লড়ে যাবে আইএসএফ। আজ তিনটি নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে একথা বলেন দলের চেয়ারম্যান ও বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, যুক্তি তর্কে পেরে উঠছে না বলেই আমাদের অপদস্ত, কোনঠাসা করা হচ্ছে। যারা গরীবের হক মেরে খাচ্ছে, সেই বিজেপি-তৃণমূল লজ্জা থাকা উচিত। এই দুটি দল একে অপরের পরিপূরক। নিয়মিত নেতা-নেত্রী আদানপ্রদান করেন। একজন হিন্দু বিপদে আছে ভোট চায়, অন্যজন মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে ভোট চায়। দিনের শেষে বিজেমূল হয়ে এরা ক্ষমতার মসনদে বসে থাকে। সংসদে গিয়ে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী, শ্রমজীবী মানুষের হয়ে কথা না বলে দানবীয় আইনগুলিকে পাশ করাতে একে অপরকে সাহায্য করে। তৃণমূলী সাংসদদের চ্যালেঞ্জ করে নওসাদ সিদ্দিকী বলেন, হিম্মত থাকলে সাংসদ তহবিলের টাকার হিসেব নিজেদের লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থানে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা টাঙিয়ে দিন।
বামপন্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আবারও বলেন, আত্মসম্মান বিকিয়ে আইএসএফ কোন আসন সমঝোতায় যাবে না। এই নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে লাভ হবে না। বিজেপি-তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলছে ও চলবেও। ভোট কাটুয়ার অভিযোগ তিনি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এই দায় আইএসএফের ওপর দেওয়া অনুচিত। গত লোকসভা নির্বাচনে দেখা গেছে কংগ্রেস ও বামদলগুলির জন্য বিজেপি দশটারও বেশি আসন জিতে গেছে। ডায়ামন্ড হারবার কেন্দ্রে তাঁর প্রার্থী না হবার প্রসঙ্গে নওসাদ সিদ্দিকী বলেন, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এখানে সিপিএমের নাক গলানোর দরকার নেই।
আইএসএফ চেয়ারম্যান সমাবেশগুলিতে বলেছেন, কোন অপপ্রচারে কান না দিয়ে, বিভ্রান্ত না হয়ে খাম চিহ্নে ভোট দিতে হবে। রাজ্য বিধানসভার মধ্যে তিনি যে লড়াকু ভূমিকা নিয়েছেন, সেই ভূমিকা আইএসএফকে সংসদের অভ্যন্তরেও নিতে হবে। মানুষের জ্বলন্ত সমস্যাগুলিকে সোচ্চারে সংসদে তুলে ধরতে তাই দলের প্রতিনিধিকে পাঠাতে হবে।
নওসাদ সিদ্দিকী আজ ভাষণ দেন শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ফুরফুরা শরিফ তালতলা ও বাঁকড়ার হাজি মার্কেটের সামনে। শেষ জনসভাটি হয় উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সমরুক হাটে। বাঁকড়া ঔ সমরুক হাটে মানুষের উপচে পড়া ভীড় ছিল। এই জনসভাগুলিতে আইএসএফের রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষে দলের রাজ্য কমিটির কার্যকারী সভাপতি সামসুর আলি মল্লিক বাঁকড়ায় বলেছেন। দলের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিত মাইতি ফুরফুরা শরিফ ও সমরুক হাটে বলেছেন। ফুরফুরা শরিফের সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্পাদক নাসিরুদ্দিন মীর উপস্থিত ছিলেন। শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সাহরিয়ার মল্লিক বক্তব্য রেখেছেন তাঁর কেন্দ্রের অন্তর্গত দুটি সভায়। সমরুক হাটে বলেছেন উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অধ্যাপক মফিকুল ইসলাম।