মোঃ নজরুল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধি:যশোরের বেনাপোল সীমান্ত পথে বিজিবি-পুলিশের কড়া নজরদারিতে থাকাতেও কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না ভারত থেকে মাদকদ্রব্য আনা। এতে আগামী প্রজন্মকে মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে রক্ষা করতে শঙ্কায় পড়েছেন অভিভাবকরা।
থেমে নেই আগ্নেয়াস্ত্র, স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রার পাচার।গত এক বছরে এ সীমান্তের কেবল ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির হাতেই মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ প্রায় দেড়শো কোটি টাকার চোরাচালান পণ্য আটক হয়েছে। এর মধ্যে কেবল ফেন্সিডিলই রয়েছে ২২ হাজার বোতল।
সচেতন মহল বলছেন, শুধু বিজিবি, পুলিশের প্রচেষ্টায় মাদক পাচার রোধ করা কঠিন। যেহেতু ভারত থেকে মাদক আসছে তাই সীমান্তরক্ষী বিএসএফের আন্তরিক সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। আর বিজিবি ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তারা সব ধরনের পাচার রোধে আন্তরিক হয়ে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে পাচারকারীদের তালিকাও হয়েছে। সবার সহযোগিতা পেলে খুব শিঘ্রই পাচার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় যশোরের বেনাপোল সীমান্ত চোরাচালানরা অনেকটা নিরাপদ রুট হিসাবে ব্যবহার করে থাকে। দুই দেশের সীমান্ত ঘেঁষে এমনভাবে মানুষের বসবাস, শনাক্ত করা কঠিন কোনটা বাংলাদেশ আর কোনটা ভারত। এ সুযোগটা কাজে লাগিয়ে পাচারকারীরা সহজে এপার-ওপার যাতায়াত করে থাকে। তবে মাদক পাচার রোধে বিজিবি কঠোর থাকলেও অনেকটা উদাসীন ভারতের সীমান্ত রক্ষী বিএসএফে সদস্যরা। এতে অনায়াসে মাদক দ্রবসহ বিভিন্ন চোরাচালান পণ্য অনায়াসে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে।
তবে বিজিবির কঠোর নজরদারতে গত এক বছরে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় দেড়শো কোটি টাকা মূল্যের মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র ,স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান পণ্য আটক হয়েছে।
বেনাপোল পৌর বাস্তুহারা লীগের সভাপতি জুলফিকার আলী মন্টু জানান, সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে মাদকের বড় বড় চালান ঢুকছে দেশে। এতে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় আছি। প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত রক্ষী ও রাষ্ট্র আন্তরিক না হলে শুধু বিজিবির পক্ষে মাদক পাচার রোধ কঠিন।
সীমান্তবাসী জানান, যেহেতু দেশের সিংহভাগ মাদক শার্শা সহ বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে। তাই এ সীমান্তে আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে বিজিবি, পুলিশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ এবং পুটখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাস্টার হাদিউজ্জামান বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের জামিন বিলম্বিত করা গেলে মাদকপাচার প্রতিরোধে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে।
৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম রেজা বলেন, ভারত থেকে মাদক এসে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের অভ্যন্তরে। সবার সহযোগিতা পেলে খুব শিগগিরই পাচার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন খান জানান,তারা ইতিমধ্যে মাদক পাচারকারীদের তালিকা করে আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।মাদকমাদক নিয়ে কোনো ছাড় নেই আমার কাছে ব্যবসায়ীদের কোন ছাড় দেওয়া হবে না বলে তিনি সব সময় কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, যশোর এলাকায় ভারতের সাথে ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত পথ রয়েছে। সেখানে সীমান্ত রক্ষায় ও চোরাচালান প্রতিরোধে কাজ করছে ৫ শতাধিক বিজিবি সদস্য। বিজিবি সীমান্তে নাইট ভীষণ ক্যামেরা, ভাসমান বিওপি, নৌরুটে স্পিড বোর্ডসহ বেশ কিছু আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে কাজ করছে।