সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৩ অপরাহ্ন

ইসলামী পুনর্জাগরণ ও কুরআনের বাণী প্রচারে আল্লামা সাঈদীর (রহঃ) ভূমিকা।

এ এম রিয়াজ কামাল হিরণ- চট্টগ্রাম জেলা। 
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
চট্টগ্রামে “ইসলামী পুনর্জাগরণ ও কুরআনের বাণী প্রচারে আল্লামা সাঈদীর (রহঃ) ভূমিকা: উম্মাহর করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।
ইক্বামতে দ্বীনের কাজে আল্লামা সাঈদী আপোষহীনভাবে দৃঢ়তার সাথে সারা জীবন কাজ করে গেছেন- অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, বিশ্বনন্দিত মুফাসসীরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রহঃ) ইক্বামতে দ্বীনের কাজে আপোষহীনভাবে আমৃত্যু সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তার বর্ণাঢ্য জীবনকে স্বৈরাচার সরকার দমিয়ে রাখতে পারেনি। তিনি সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বময় কুরআনের রাজ কায়েমে নিরলসভাবে দাওয়াতি কাজ করে গেছেন। এটি আমাদের জন্য অনুকরণীয় এবং অনুসরণীয়।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইসলামী পুনর্জাগরণ ও কুরআনের বাণী প্রচারে আল্লামা সাঈদীর (রহঃ) ভূমিকা: উম্মাহর করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীরে জামায়াত বলেন, আল্লামা সাঈদীকে ভালোবাসতে হলে কুরআনের পাঠক হতে হবে, কুরআন নিয়ে গবেষণা করতে হবে, কুরআনের শাসন কায়েমে তাঁর মতো নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি আজীবন কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে গেছেন। তিনি জাতীয় সংসদে মদ-জুয়া বন্ধে বিল উত্থাপন করেছিলেন, সংসদে মাথা নত করে প্রবেশ করতে হতো সেটাও আল্লামা সাঈদী বিল উত্থাপন করার মাধ্যমে জাতীয় সংসদে পাস করিয়ে নেন। আমরা সংসদ সদস্যরা সেদিন থেকে একটি বড় ধরনের শিরক থেকে বেঁচে গিয়েছি এটা আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীরই অবদান।
তিনি বলেন, দ্বীনের জন্য আল্লামা সাঈদী জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে ভালোবাসতেন। তার মধ্যে শাহাদাতের তামান্না ছিল প্রবল। আমাদের মধ্যেও শহীদি তামান্না থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কুরআনের রাজ কায়েম করার জন্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মতো জান-মাল বিনিয়োগ করতে হবে। তিনি আল্লামা সাঈদীর কামনা অনুযায়ী সকল আলেম-উলামা মাশায়েখকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জালিম সরকারের পতন ত্বরান্বিত করার আহবান জানান।
ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত আরও বলেন, আল্লামা সাঈদী শহীদ হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে চাইতেন। আল্লাহ পাকও তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন। তিনি দেশে বিদেশে কুরআনের বাণী প্রচারে করে বেড়াতেন। অনেক অমুসলিম তার তাফসির শুনে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ইসলাম প্রচারের জন্য তিনি প্রায় ৫০টির অধিক দেশে সফর করেছেন। আল্লামা সাঈদী আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তার তাফসির শুনে মনে হয় আমাদের মাঝে এখনো আছেন। তার তাফসিরের ভিডিও-অডিও ব্যাপকভাবে প্রচার প্রসার করতে হবে। যার মাধ্যমে লক্ষ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। আপনাদের এই প্রচারের কারণে কোন লোক যদি হেদায়েতের দিশা পায় আপনিও সওয়াবের অংশীদার হবেন।
আমরা দীন প্রতিষ্ঠার যে সময়টুকু ব্যয় করছি এই জন্য আল্লাহ তা’আলা যেন উত্তম প্রতিদান দেন সে জন্য সবাই দোয়া করবেন।
তিনি বলেন, শিরক বিদআতের ব্যাপারে আল্লামা সাঈদী জনগণকে সচেতন করতেন। তিনি অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করতেন না। তার মত সাহসী ভূমিকা পালন করে ফ্যাসিবাদী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ভূমিকা পালন করতে হবে। আসুন আমরা আল্লাহর কুরআনের বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি। আমরা যদি সাহসের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি তাহলে সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন কুরআনের রাজ কায়েম হবে, মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। আজ ভোটের অধিকার নেই ভাতের অধিকার নেই বেঁচে থাকারও অধিকার নেই। গুম করে ফেলা হয়। অসহায় মানুষ আজ আহাজারি করছে। তিনি আমীরে জামায়াত ডাক্তার শফিকুর রহমানসহ সকল নেতৃবৃন্দকে মুক্তির দাবী জানান।
তিনি বলেন, আল্লামা সাঈদীর ইচ্ছা ছিল কুরআনের রাজ কায়েম হওয়ার দৃশ্য দেখে যাবার। কিন্তু সেই ইচ্ছা এখনো পূরণ হয়নি। আসুন আমরা কুরআনের রাজ কায়েমের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহাকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মুহাম্মদ শাহজাহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট ইসলামী স্কলার অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়্যেদ কামাল উদ্দিন জাফরী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচালক উপাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ও ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা লুৎফুর রহমান, আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও আল্লামা সাঈদীর ছেলে শামীম বিন সাঈদী, পিরোজপুর জেলার আমীর তাফাজ্জল হোসেন ফরিদ, ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহের, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বকর রফিক আহমেদ, শিক্ষাবিদ ড. আব্দুস সালাম আযাদী ও বাংলাদেশ উলামা-মাশায়েখ পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি অধ্যক্ষ ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আবু নোমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও শিল্পী অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মনসুর, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ কফিল উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. এ কে এম ফজলুল হক। সমাপনী বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শুরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর ড. আ. জ. ম. ওবায়েদুল্লাহ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যথাক্রমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শুরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ, এফ এম ইউনুস ও মুর্শেদুল ইসলাম চৌধুরী। আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগরী জামায়াতের প্রচার সম্পাদক এএইচএম কামাল, মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মাওলানা কামালুদ্দীন জাফরী বলেন, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী চট্টগ্রামবাসীকে বেশি মহব্বত করতেন এবং তিনিও চট্টগ্রামকে বেশি ভালবাসতেন। তিনি কুরআনের তাফসীরের মাধ্যমে পুরো বিশ্ববাসীর হৃদয়ের স্পন্দন ছিলেন। তিনি যেভাবে কুরআনের রাজ কায়েম করার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন বর্তমান প্রজন্মকেও কুরআনের রাজ কায়েমে এগিয়ে আসতে হবে। দাওয়াতে ইসলামকে কেন্দ্র করেই তাঁর এ জনপ্রিয়তা এ দাওয়াতকে সর্বত্র প্রসারিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, আল্লামা সাঈদী বিশ্বজোড়া এক বিশাল ব্যক্তিত্ব। তিনি তার জীবনকে ইসলামী আন্দোলনের জন্য নিবেদিত করে গেছেন। তিনি সুললিত কণ্ঠে কুরআনের তাফসির করতেন বলে মানুষ তার জন্য পাগল ছিলেন। তিনি জাতি গঠনে ঐতিহাসিক অবদান রেখে আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সরকার যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা অজুহাত তোলে যে অপবাদ দিয়েছিল তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আল্লামা সাঈদী অবিচারের শিকার হয়েছেন। তার সাজাও বিস্ময়কর। তার রায়ের বিচারপতি প্যানেলের একজন সাঈদী সাহেবকে বেকুসুর খালাস করে দিয়েছিল।
মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, মানুষ আল্লামা সাঈদীতে এত ভালবাসে কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলতেন, আল্লাহর কসম মানুষ সাঈদীকে নয় আল্লাহর কুরআরকে ভালোবাসে বলেই সাঈদীকে ভালোবাসত। দীর্ঘ ১৩টি বছর তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন। তার হাসি দেখে কখনো মনে হতো না তিনি অসুস্থ। এই হাসি দিয়েই তিনি কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছেন।
উপাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আব্দুর রব বলেন, যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালা ঈমানদারদের পরীক্ষা নিয়েছেন। সবাইকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। যারা এই পরীক্ষায় টিকে যাবেন, তারাই ঈমানদার। মাওলানা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। আমরা কুরআনের আন্দোলনে অবিচল থাকব, যতই বাধা আসুক না কেন।
অধ্যাপক আহসান উল্লাহ বলেন, আল্লামা সাঈদীর জীবনের পুরো সময়টাই কুরআনের জন্য বরাদ্দ ছিল। কারাগারেও তিনি দ্বীনের দাওয়াত সম্প্রসারণে কাজ করে গেছেন।
মাওলানা লুৎফুর রহমান বলেন, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অর্ধশতাব্দী ধরে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে গেছেন। তিনি ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার স্বপ্ন দেখতেন এবং সে লক্ষ্যে তিনি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অবিচল ছিলেন।
আল্লামা সাঈদীর ছেলে শামীম বিন সাঈদী বলেন, দেশবাসী আমার বাবার প্রতি যে ভালবাসা দেখিয়েছেন তা আমরা কখনো ভুলতে পারব না।
তাফাজ্জল হোসেন ফরিদ বলেন, আল্লামা সাঈদী অবিচার ও জুলুমের শিকার। মিথ্যা অভিযোগে তিনি ১৩ বছর কারাগারে বন্দী ছিলেন। তাকে বিনা চিকিৎসায় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এই অবিচারের বিচার আমরা আল্লাহর কাছে চাই।
অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহের বলেন, কোনো লোভ লালসা তাকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি। গ্রেফতারের পরও তার কাছে প্রলোভন এসেছিল, কিন্তু আদর্শের প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপসহীন। তিনি বাস্তবে যা বলতেন তা আমল করতেন।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বকর রফিক আহমেদ বলেন, আল্লামা সাঈদী অবিচার ও জুলুমের স্বীকার। তার মৃত্যুতে বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ শোকাহত। বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে আল্লামা সাঈদীকে উৎসর্গ করে কবিতা পাঠ করে শুনান।
বিশিষ্ট ইসলামী স্কলার ও শিক্ষাবিদ ড. আব্দুস সালাম আযাদী বলেন, আল্লামা সাঈদী ছিলেন একটি ইতিহাস, একটি নাম, একটি ইসলামী আন্দোলন। তার আমল-আখলাক ও রুহানী শক্তি দিয়ে মানুষের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন।
সাইফুল্লাহ মনসুর বলেন, আল্লামা সাঈদীর শূন্যতা কোনদিন পূরণ হবার নয়।
অধ্যক্ষ ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আবু নোমান বলেন, আল্লামা সাঈদীর মত ইসলামী স্কলার আজ বড়ই প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সর্বদা তিনি সোচ্চার ছিলেন। সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তার কণ্ঠ উচ্চকিত ছিল।
অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ কফিল উদ্দিন বলেন, আমি পিরোজপুরে গিয়েছিলাম। সেখানে জনগণ আল্লামা সাঈদীকে কী পরিমাণ ভালোবাসতো তা স্বচক্ষে দেখেছি।
ডা. এ কে এম ফজলুল হক বলেন, চট্টগ্রামবাসী আল্লামা সাঈদীকে বেশি ভালবাসতেন। তিনিও চট্টগ্রামবাসীকে বেশি ভালবেসেছেন।
অনুষ্ঠানে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন পাঞ্জেরী ও পারাবার শিল্পী গোষ্ঠী। সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী আব্দুল আলিম আশিক।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102