বিদ্যুৎতের অবৈধ সংযোগে জড়িয়ে ভ্যান চালকের মৃত্যু।
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর সদরের বিনোদনপুর ইউনিয়নে সম্মিলিত খামারের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের তারে জড়িয়ে আমির হোসেন (৫৫) নামের এক ভ্যান চালকের মৃত্যু হয়েছে।
পরে দুই লাখ টাকায় ঘটনা রফাদফা করে নিহতের লাশ ময়না তদন্ত ছাড়া দাফন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বুধবার বিকালে উপজেলার নলপুর গ্রামের হোরন চেয়ারম্যান পুলের সামনে রহুল আমিনের খামারে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যুৎপৃষ্ঠে নিহত আমির হোসেন উপজেলার নলপুর গ্রামের শামসুল হক সুধোর বাড়ির আলী আকবরের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভ্যানচালক ছিলেন।
স্থানীয় টিপু সুলতান জানান, প্রবাসী রুহুল আমিন নলপুর গ্রামের হোরন চেয়ারম্যান পুল এলাকায় একটি মৎস্য, হাঁস-মুরগীর খামার গড়ে তোলেন। সাম্প্রতিক তার খামারের তত্ত্বাবধায়ক জুম্মন খাঁন প্রিন্স রাস্তার দক্ষিণ পাশের খামার থেকে রাস্তার উত্তর পাশের খামারে অবৈধভাবে পুলের নিচ দিয়ে পানির সংস্পর্শে রেখে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়। ওই বিদ্যুৎ সংযোগে শর্টসার্কিট একাধিক ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বুধবার বিকালে স্থানীয় ভ্যান চালক আমির হোসেন ওই পুলের নিচে পানিতে নেমে কচুর ফুল তুলতে গেলে বিদ্যুৎতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ঠে মারা যায়। ঘটনার পর রাতেই দুই পক্ষ সমঝোতা করে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করেন।
নিহত আমির হোসেনের ছেলে মো. আসিফ বলেন, ওখানে যে বিদ্যুৎ লাইন আছে, আমার বাবা দেখে নাই। আল্লাহ আমার বাবারে নিয়ে গেছেন। কাকে দোষ দিবো, দোষ আমাদের কপালের। আমরা চার ভাই-বোন। কিভাবে আমাদের সংসার চলবে। প্রতিবেশী রিপন কাকার মাধ্যমে খামারের মালিকের সাথে একটা সমঝোতা হয়েছে, তবে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে তা আমি জানিনা। শুধু তারা বলেছে পুলিশ লাশ নিলে বাবা আরো কষ্ট পাবে। তাই থানায় গিয়ে দরখাস্ত দিয়ে বাবারে নিতে দিই নাই।
বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বাবুল বলেন, খামারের মালিক পক্ষ ও নিহত আমির হোসেন উভয় প্রতিবেশী। আমি শুনেছি, তারা উভয় পরিবার এবিষয়ে সমঝোতা করে নিয়েছেন।
সুধারাম মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল হাসান জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিদ্যুৎ সংযোগটি বৈধ, তবে একটি খামার থেকে অপর একটি খামারে বৈধ মিটার থেকে সংযোগ নেয়ায় বিদ্যুৎতের তার ঝুলে পড়ে ছিল। এতে র্দুঘটনাটি ঘটে। এবিষয়ে নিহতের পরিবার কোন অভিযোগ না করায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়নি। তারা বিনাময়নাতদন্তে লাশ দাফনের আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ তা মঞ্জুর করেন।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছি। খামারের সংযোগটি বৈধ ছিলো। তবে মিটার থেকে অন্য একটি খামারে ব্যক্তিগতভাবে নেওয়া লাইনের তারে জড়িয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। মিটার পর্যন্ত লাইনের দায়িত্ব আমাদের। আমরা আজ (৫ আগস্ট) সকালে তার ব্যক্তিগত লাইনটি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছি।