সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

সেজান জুস কারখানার পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় আবার উদ্ধার অভিযান শুরু।

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১

সেজান জুস কারখানার পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় আবার উদ্ধার অভিযান শুরু।

 

নারায়ন সরকার,রূপগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

 

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড লিমিটেডের ছয়তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনায় তৃতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস।
শনিবার সকাল ৮ থেকে এ অভিযান শুরু হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লাশ পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার বিকালে অগ্নিকা-ের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২৯ ঘণ্টা পর শুক্রবার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে যায় সব। কারখানার ভেতর থেকে একের পর এক বের করে আনা হয় আগুনে পুড়ে অঙ্গার হওয়া লাশ। সেখানকার বাতাসে ভাসতে থাকে পোড়া লাশের উৎকট গন্ধ। ভবনের কলাপসিবল গেট বন্ধ থাকায় বাড়ে হতাহতের সংখ্যা।
এ ঘটনায় বেশ কিছু শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিস। অগ্নিকা-ের কারণ অনুসন্ধান এবং দায়ীদের খুঁজে বের করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস এবং কলকারখানা প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।###

রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডি
সিঁড়ি বন্ধ, গেট তালাবদ্ধ, পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা না থাকায় মৃত্যুও সংখ্যা বৃদ্ধিঃ মালিকপক্ষের অস্বীকার

 

রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড লিমিটেডের ছয়তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ৫২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস বলেছে, ভবনের চারতলায় তালাবদ্ধ থাকায় এবং অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র না থাকার কারণে এত প্রাণহানি হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে কারখানার মালিক পক্ষ।
এ ব্যাপারে সজীব গ্রুপের মালিক এমএ হাসেমের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মালিকের পক্ষ থেকে ওই গ্রুপের একজন ম্যানেজার কাজী রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘ইকুইপমেন্ট (যন্ত্রপাতি) এনাফ (যথেষ্ট) পরিমাণ ছিল। আমার অ্যালার্ম দেয়ার জন্য সবকিছু ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিচতলায় আগুন ধরার কারণে পুরোটা ছড়িয়ে গেছে।’ ভবনের চার তলায় তালাবদ্ধ ছিল, সে কারণে শ্রমিকরা বের হতে পারেননি। ফায়ার সার্ভিস এই অভিযোগের বিষয়ে কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটি মিথ্যা কথা, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
কিন্তু ফায়ার সার্ভিস বলেছে, আগুন নেভানোর পর তারা চারতলায় তালাবদ্ধ থাকায় একটি জায়গায় ৪৯ জনের মৃতদেহ পেয়েছে। তাহলে সেটাকে কীভাবে মিথ্যা কথা বলছেন?
এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যখন নিচতলায় আগুনটা ধরেছে, তখন সবাই আতঙ্কে ওপরে চলে গেছে।’ তাহলে এত মানুষের মৃত্যুর দায়িত্বটা কে নেবে- প্রশ্নের জবাবে ইসলাম বলেন, ‘ডিসি ও ডিআইজির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এটা আমাদের মালিক পক্ষ দেখবে। হতাহতদের ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণ ম্যানেজমেন্ট দেবে।’
কারখানাটির মালিকের পক্ষ থেকে অসংগতির অভিযোগগুলো অস্বীকার করা হলেও ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বলেছেন, ভবনে চারতলায় সিঁড়ির গেট তালাবন্ধ থাকায় সেখানে আটকা প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে।
কারখানার ভবনটি আগুন নেভানোর ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেছেন, তাদের তদন্তে সব অভিযোগ খতিয়ে দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে কারখানাটিতে আগুন লাগার পর রাত পর্যন্ত তিনজন নারী শ্রমিকের মৃতদেহ এবং ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সকালে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এনিয়ে ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানার ভেতরে আরও লাশ আছে কিনা তা খুঁজতে শনিবার সকালে থেকে তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102